সোনার রূপার দাম আজ: ভারতীয় বাজারে সম্প্রতি সোনার দাম সামান্য হ্রাস পেয়েছে, যা সোনা কেনার জন্য একটি ভালো সুযোগ হতে পারে। গত কয়েকদিন ধরে সোনার দাম ওঠানামা করছে, এবং এখন তা কিছুটা কমেছে। এই পতনের সুযোগ নিতে ক্রেতারা সারা দেশের সোনার বাজার এবং গয়নার দোকানগুলিতে ভিড় করছেন। মানুষ এই সুযোগটি কাজে লাগিয়ে বিয়ে বা বিনিয়োগের জন্য সোনা কেনার চেষ্টা করছে। বিশেষজ্ঞরা মনে করেন আসন্ন উৎসবের মরশুমে দাম আবার বাড়তে পারে।
দীপাবলি এবং ধনতেরাসের আগে কেনাকাটার সময়
অক্টোবর এবং নভেম্বর ভারতে উৎসবের মাস। ধনতেরাস এবং দীপাবলির মতো শুভ অনুষ্ঠানে সোনা কেনা খুবই শুভ বলে মনে করা হয়। এই উৎসবগুলিতে সোনার চাহিদা উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পায়, যার ফলে দাম বৃদ্ধি পায়। অতএব, যারা সোনা বা রূপা কেনার পরিকল্পনা করছেন তাদের এই সময়ের সদ্ব্যবহার করা উচিত। উৎসবের আগে কেনাকাটা করলে দাম বেশি এড়াতে সাহায্য করতে পারে। উপরন্তু, অক্টোবর মাসেও বেশ কিছু শুভ সময় আসে যখন মানুষ সোনা কিনতে পছন্দ করে। ফলস্বরূপ, সারা মাস জুড়ে সোনার চাহিদা বেশি থাকার আশা করা হচ্ছে।
রাজধানী দিল্লিতে সোনার দাম
জাতীয় রাজধানী দিল্লিতে, আজ ২৪ ক্যারেট সোনার দাম প্রতি গ্রামে ১২,৩৪১ টাকা, যেখানে ২২ ক্যারেট সোনার দাম প্রতি গ্রামে ১১,৪০৫ টাকা। দিল্লির সোনার বাজার দেশের বৃহত্তম সোনার ব্যবসা কেন্দ্রগুলির মধ্যে একটি। চাঁদনী চক এবং কারোলবাগের মতো এলাকায় অবস্থিত বৃহৎ সোনার বাজারগুলি বৃহৎ সোনার বাজারের আবাসস্থল, যেখানে দৈনিক কোটি কোটি টাকার লেনদেন হয়। দিল্লিতে সোনার দাম প্রায়শই দেশের অন্যান্য শহরের জন্য একটি মানদণ্ড হিসেবে কাজ করে।
মুম্বাই, কলকাতা এবং হায়দ্রাবাদে দাম
অন্যান্য প্রধান শহর, মুম্বাই, কলকাতা এবং হায়দ্রাবাদে, আজ ২৪ ক্যারেট সোনার দাম প্রতি গ্রামে ১২,৪৩৬ টাকা, যেখানে ২২ ক্যারেট সোনার দাম প্রতি গ্রামে ১১,৩৯০ টাকা। মুম্বাইয়ের জাভেরি বাজার হল দেশের প্রাচীনতম এবং সবচেয়ে বিখ্যাত সোনার বাজার, যেখানে পাইকারি সোনাও কেনাবেচা হয়। কলকাতার বো বাজার সোনার জন্যও বিখ্যাত। এই তিনটি শহরে দাম মোটামুটি একই রয়ে গেছে কারণ এগুলি প্রধান বাণিজ্য কেন্দ্র।
চেন্নাইতে সবচেয়ে দামি সোনা
দক্ষিণ ভারতের একটি প্রধান শহর চেন্নাইতে আজ সোনা সবচেয়ে দামি। চব্বিশ ক্যারেট সোনা প্রতি গ্রামে ₹১২,৪৫৪ এ পৌঁছেছে। বাইশ ক্যারেট সোনার দাম প্রতি গ্রামে ₹১১,৫২৫। চেন্নাইতে সোনার দাম বেশি হওয়ার কারণ স্থানীয় কর এবং পরিবহন খরচ। দক্ষিণ ভারতে সোনার ব্যবহার অনেক বেশি এবং এখানকার মানুষ সোনার গয়না পছন্দ করে। তামিলনাড়ু এবং কেরালায়, বিয়েতে ভারী সোনার গয়না উপহার দেওয়ার ঐতিহ্য রয়েছে।
গুজরাটের শহরগুলিতে সোনার দাম
গুজরাটের আহমেদাবাদ এবং ভদোদরায়, চব্বিশ ক্যারেট সোনা প্রতি গ্রামে ₹১২,৪৩১ এবং বাইশ ক্যারেট সোনা প্রতি গ্রামে ₹১১,৩৯৫। আহমেদাবাদের মহালক্ষ্মী বাজার সোনার জন্য বিখ্যাত। গুজরাটের লোকেরা ব্যবসা এবং বিনিয়োগের জন্য সোনা কিনতে পছন্দ করে। এখানে একটি বড় সোনার বাজার রয়েছে এবং ব্যবসাও ভালো চলছে।
আন্তর্জাতিক বাজারে সোনার অবস্থা
আন্তর্জাতিক বাজারেও সোনার দাম ওঠানামা করছে। আজ, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে এক গ্রাম সোনার দাম প্রায় ১১,৬৬৮ টাকার সমান। দুবাইতে প্রতি গ্রাম সোনা ১১,৫৮৯ টাকায় এবং সৌদি আরবে প্রতি গ্রাম ১১,৭১১ টাকায় পাওয়া যায়। আন্তর্জাতিক বাজারে সোনার দামের ওঠানামা সরাসরি ভারতীয় বাজারে প্রভাব ফেলে। ভারত বিশ্বের সোনার বৃহত্তম ভোক্তাদের মধ্যে একটি এবং সোনার চাহিদা সর্বদা বেশি থাকে। বিদেশ থেকেও সোনা আমদানি করা হয়।
সোনার দাম বৃদ্ধির কারণ
এই সপ্তাহে সোনার দাম বৃদ্ধির পিছনে বেশ কয়েকটি কারণ রয়েছে। আন্তর্জাতিক বাজারে ডলারের দুর্বলতা সোনাকে আরও ব্যয়বহুল করে তোলে। অপরিশোধিত তেলের দাম বৃদ্ধি সোনার উপরও প্রভাব ফেলে। উৎসবের মরশুম ঘনিয়ে আসার সাথে সাথে, অভ্যন্তরীণ চাহিদা বেড়েছে। জুয়েলাররা বলছেন যে যদি এই হারে চাহিদা বাড়তে থাকে, তাহলে আগামী দিনে সোনা আরও ব্যয়বহুল হতে পারে। এমনকি বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তার সময়েও, মানুষ সোনাকে একটি নিরাপদ বিনিয়োগ বলে মনে করে, যা চাহিদা বৃদ্ধি করে। ভারতে, ধনতেরাস এবং দীপাবলির সময় সোনা কেনা শুভ বলে মনে করা হয়, তাই এই সময়গুলিতে চাহিদা বিশেষভাবে বৃদ্ধি পায়।
রূপার দামের ওঠানামা
সোনার পাশাপাশি রূপার দামও ওঠানামা করছে। আজ রূপার দামও কিছুটা কমেছে। গত সপ্তাহে রূপার দাম প্রতি কেজি ৭৪,৫০০ টাকায় পৌঁছেছিল, কিন্তু এখন এর দাম প্রতি কেজি ৭৩,০০০ থেকে ৭৫,০০০ টাকার মধ্যে নেমে এসেছে। ব্যবসায়ীরা মনে করেন যে শিল্প চাহিদা হ্রাস এবং ডলারের শক্তিশালীকরণ রূপার দামের উপর প্রভাব ফেলেছে। তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন যে এই পতন সাময়িক হতে পারে। উৎসবের সময় রূপার মুদ্রা এবং বাসনপত্র কেনা ঐতিহ্যবাহী, যা আগামী দিনে রূপার চাহিদা বাড়িয়ে তুলতে পারে।
বর্তমান সময় সোনা কেনার জন্য একটি ভালো সুযোগ, কারণ দাম কিছুটা কমেছে। উৎসবের আগে কেনা বুদ্ধিমানের কাজ হবে। তবে, হলমার্ক পরীক্ষা করা এবং কেনার আগে দাম তুলনা করা গুরুত্বপূর্ণ। বিনিয়োগের দৃষ্টিকোণ থেকে সোনাকেও একটি ভালো বিকল্প হিসেবে বিবেচনা করা হয়।